সময়: ৬০ মিনিট বা ১ ঘন্টা। এর মধ্যে কোন ধরনের বিরতি থাকে না।
পেপার ফরমেট: এই সেকশনের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীকে প্রশ্ন দেয়া হবে। যা পড়ে পড়ে উত্তরপত্রে সঠিক উত্তরগুলো লিখতে হবে।
টাস্কের সংখ্যা: ৩ ধরনের টাস্ক (প্যাসেজ) থাকবে।
প্রশ্ন সংখ্যা: ৪০ টি প্রশ্ন থাকে।
নাম্বার: প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নাম্বার থাকে। অর্থাৎ ৪০ টি প্রশ্নের জন্য ৪০ নাম্বার থাকে।
আয়েল্টস পরীক্ষায় লিসেনিং সেকশনের পর পরীক্ষার্থীকে টেস্টের দিন দীর্ঘ ৬০ মিনিটের জন্য রিডিং সেকশনের জন্য বসতে হয়। আর এই সেকশনটিতে ভোকাবুলারীর ব্যবহার সব থেকে বেশি হয়। অর্থাৎ এই সেকশনটির পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীকে প্যাসেজ পড়ে তার উত্তর করতে হবে। আর প্যাসেজগুলোর অর্থ বুঝতে হলে ভোকাবুলারী এর ভাণ্ডার সমৃদ্ধ থাকতে হবে। নাহলে ভুল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আয়েল্টস টেস্টের এই সেকশনটির পরীক্ষা সব থেকে দীর্ঘক্ষণের হয়ে থাকে। আর সেকশনটির মাঝে কোন বিরতিও পাওয়া যায় না। তাই প্যাসেজ পরে তা বুঝে ৪০ টি প্রশ্নের উত্তর করাটা বেশ কঠিন।
এবার তাহলে রিডিং সেকশনের টাস্কএবং প্রশ্ন সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক :
আয়েল্টস টেস্টের এই সেকশনটিতে ৩টি আলাদা প্যাসেজ থাকে। আর এই প্যাসেজগুলোর অধীনে বেশ কিছু প্রশ্ন থাকে।
প্যাসেজ ১ :
রিডিং সেকশনের এই প্যাসেজটি অপর দুটি প্যাসেজের চেয়ে তুলনামূলকভাবে সহজ হয়ে থাকে। এখানে এই প্যাসেজ এর নিচে কয়েক ধরেনর প্রশ্ন করা হয়। তাই প্যাসেজটি পরে একজন পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের উত্তরগুলো করতে হবে। তবে এই প্যাসেজের জন্য কখনোই ২০ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করা উচিত নয়।
প্যাসেজ ২ :
এই সেকশনের প্রথম প্যাসেজটির তুলনায় এই প্যাসেজটি তুলনামূলক একটু কঠিন হয়ে থাকে। এখানে থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়। যেগুলো প্যাসেজ থেকে পড়ে তথ্য নিয়ে উত্তর করতে হয়। এই প্যাসেজের জন্যও ২০ মিনিটের অধিক সময় ব্যয় করা উচিত নয়।
প্যাসেজ ৩ :
এই প্যাসেজটি রিডিং সেকশনের সব থেকে কঠিন অংশ। যা পার্দশিতার মাপমাঠিতে পার্থক্য এনে দিতে সক্ষম। এই প্যাসেজটি থেকেও বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়। এই প্যাসেজের জন্য ২০ মিনিটের অধিক সময় ব্যয় করা উচিত নয়। তবে এটি যেহেতু অন্য প্যাসেজগুলোর তুলনায় কঠিন তাই অন্য প্যাসেজগুলো থেকে সময় বাঁচিয়ে এখানে দেয়া উচিত।
এই রিডিং প্যাসেজগুলো থেকে বিভিন্ন ধরন বা প্যাটার্ন এর প্রশ্ন করা হয়। আর এই ভাবে প্রায় ১১ রকমে প্রশ্ন আসতে পারে আয়েল্টস রিডিং টেস্টে। এগুলো হল:

Multiple choice: যেখানে A, B, C অথবা D থেকে যেকোন ১ টি উত্তর সিলেক্ট করতে হবে। অথবা A, B, C, D অথবা E থেকে ২ টি সঠিক উত্তর কিংবা A, B, C, D, E, F অথবা G থেকে ৩ টি সঠিক উত্তর নিয়ে উত্তরপত্রে লিখতে হবে।
Identifying information: এই ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষার্থীকে তথ্য যাচাই করতে হবে। এবং যাচাই করে তথ্যটি ‘true’, ‘false’ অথবা ‘not given’ এর কোনটি তা উত্তর দিতে হবে।
Identifying writer’s views/claims: এই ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষার্থীকে তথ্য যাচাই করতে হবে। এবং যাচাই করে তথ্যটি ‘yes’, ‘no’ অথবা ‘not given’ অপশনের মধ্যে উত্তর দিতে হবে।
Matching information: প্যাসেজের মধ্যে ‍A, B, C, D, E, F করে বেশ কিছু তথ্য দেয়া থাকে। পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের দেয়া তথ্যটি কোন পয়েন্টের আন্ডারে আছে তা খুঁজে বের করতে হয়।
Matching headings: এই ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষার্থীকে i, ii, iii অপশনের অধীনে কিছু পয়েন্ট বা শিরোনাম দেয়া হয়। যেগুলোর মধ্যে কোনটি আর্টিকেলের শিরোনাম হতে পারে জানতে চাওয়া হয়।
Matching features: এমন প্রশ্নে পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের একাধিক তথ্য দিয়ে সঠিক উত্তরটি খুঁজে বের করতে হবে।
Matching sentence endings: এটি অনেকটা শূণ্যস্থান পূরণের মতো প্রশ্ন হয়। এখানে একটি Sentence এর শেষের অংশে ফাঁকা ঘর থাকবে। যা প্যাসেজ পরে সমার্থক শব্দ দিয়ে পূরণ করতে হবে।
Sentence completion: এটাও শূণ্যস্থান পূরণ। এখানে পরীক্ষার্থীকে প্যাসেজ থেকে আইডিয়া নিয়ে Sentence পূরণ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রশ্নে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। যেমন- Write ‘NO MORE THAN THREE WORDS AND/OR A NUMBER from the passage’, ‘ONE WORD ONLY’ অথবা ‘NO MORE THAN TWO WORDS from the passage for each answer.’ এই ধরনের শর্ত দেয়া হয়।
Summary, note, table, flow-chart completion: এখানে প্যাসেজের পাশাপাশি Summary, note, table, flow-chart completion ইত্যাদি দেয়া থাকবে। তবে পরীক্ষার্থীকে সকল সূত্র থেকে উত্তর বের করে নিয়ে আসতে হবে। আর এখানেও Write ‘NO MORE THAN THREE WORDS AND/OR A NUMBER from the passage’, ‘ONE WORD ONLY’ অথবা ‘NO MORE THAN TWO WORDS from the passage for each answer.’ এই ধরনের শর্ত দেয়া হয়।
Diagram label completion: এই ধরনের প্রশ্নে চিত্র দেয়া হয় তবে কি চাওয়া হচে্ছ তা বুঝে পরীক্ষার্থীকে উত্তর করতে হবে। অনেক সময় প্রশ্নে শব্দ বা সংখ্যাও চাইতে পারে। তাই প্রশ্ন বুঝে উত্তর করতে হবে। এখানেও Write ‘NO MORE THAN THREE WORDS AND/OR A NUMBER from the passage’, ‘ONE WORD ONLY’ অথবা ‘NO MORE THAN TWO WORDS from the passage for each answer.’ এই ধরনের শর্ত দেয়া হয়।
Short-answer questions: এখানে প্যাসেজের আলোকে প্রশ্ন করা হবে। পরীক্ষার্থীকে প্রশ্ন বুঝে প্যাসেজ থেকে উত্তর করতে হবে। তবে শব্দের লিমিটেশন কত তা খেয়াল করতে হবে। শর্ত অতিক্রম করলে উত্তর ভুল ধরা হবে।
লক্ষ্যনীয় যে, রিডিং সেকশনের পরীক্ষায় প্রশ্নে বেশ কিছু তথ্য এবং শর্তের উল্লেখ করা হয়। যেগুলো অবশ্যই পালনীয়। মানে আপনাকে পুরোটা মেনে তারপর উত্তর করতে হবে। তাই প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র পাওয়া মাত্রই উত্তর করার জন্য ঝাপিয়ে পড়বেন না। বরং ইন্সট্রাকটর কি বলছেন তা শুনে এবং প্রশ্ন কি চাইছে সে দিকে মনোযোগী হয়ে বুঝে উত্তর করতে হবে।
আয়েল্টস: রিডিং সেকশনের স্ট্রাটিজি
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্যাসেজ থেকে উত্তর খুঁজে উত্তরপত্রে লিখতে হয় আয়েল্টস টেস্টের রিডিং সেকশনে। যা অধিকাংশ পরীক্ষার্থীর জন্যই বেশ চ্যালেঞ্জিং। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর অনেকেই করতে পারে না।
প্রস্তুতিটা ভালোই, উত্তরও খুঁজে বের করতে পারবেন মনে আত্মবিশ্বাস আছে। কিন্তু সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকলে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করা প্রায় অসম্ভব। এই সেকশনে তাই প্রস্তুতির সাথে কার্যকরী কিছু স্ট্রাটিজি জানা থাকাটা জরুরী।
স্ট্রাটিজি ১ :
প্যাসেজগুলো যতোটা সম্ভব দ্রুত পড়ে যাওয়া।
আয়েল্টস টেস্টের এই সেকশনটিতে ৩টি প্যাসেজ থাকে। প্যাসেজগুলো প্রায় হাজারের অধিক শব্দের হয়ে থাকে। প্রতিটি প্যাসেজের জন্য গড়ে সময় পাওয়া যায় মাত্র ২০ মিনিট করে। এর মধ্যে পুরো প্যাসেজটি পড়ে উত্তর করতে যাওয়াটা বোকামি হবে। তাই পুরো প্যাসেজের একটি ওভারভিউ নিতে। খুব দ্রুত চোখ বুলিয়ে যেতে হবে। নাহলে পরে উত্তর করার সময় পাওয়া যাবে না। এসময় ছোট ছোট নোট নিয়ে রাখা যেতে পারে।
স্ট্রাটিজি ২ :
প্যাসেজের ডিফিকাল্টি অনুযায়ী পরীক্ষার শুরুতেই সময় ভাগ করে নেয়া।
রিডিং সেকশনের পরীক্ষার শুরুতেই প্যাসেজগুলো স্কিমিং অ্যান্ড স্ক্যানিং করার পর প্রতিটি প্যাসেজের জন্য সময় ভাল করে ফেলতে হবে। এরপর সেই সময়ের মধ্যে প্যাসেজের অধীনে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর করতে হবে। যেমন- প্রথম প্যাসেজটি বরাবরই তুলনামূলক সহজ হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এই প্যাসেজের জন্য ১৭ মিনিট, ২য় প্যাসেজের জন্য ১৯ মিনিট এবং শেষের প্যাসেজটি সাধারণত সব চেয়ে কঠিন হয় বলে সেটার জন্য ২১ মিনিট। এভাবে টাইম ভাগ করার পরেও হাতে ২-১ মিনিট পাওয়া যাবে। তখন উত্তরগুলো চেক করে নিতে পারবেন।
স্ট্রাটিজি ৩ :
প্রথমে প্রশ্ন পড়ে নিয়ে পরে প্যাসেজে উত্তরগুলো খোঁজা।
পুরো প্যাসেজটি পড়ে এরপর উত্তর খুঁজতে গেলে শেষে গিয়ে হাতে সময় পাওয়া যায় না। এজন্য প্রথম প্রশ্নগুলো ভালো ভাবে পড়ে তারপর প্যাসেজে গিয়ে উত্তরগুলো খুঁজে বের করা উচিত। এতে করে উদ্দেশ্যহীন ভাবে প্যাসেজ না পড়ে বরং নির্দিষ্ট উত্তরের জন্য প্যাসেজটি পড়া হয় এবং তা মূল্যবান সময় বাঁচিয়ে দিতে পারে।
স্ট্রাটিজি ৪:
একটি প্রশ্নে অনেক বেশি সময় না দেয়া।
অনেকেই একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া পর্যন্ত সেটির উত্তর খুঁজতেই থাকেন। এতে অতিরিক্ত অনেক সময় ব্যয় হয়। তবে পুরো প্যাসেজটি বার বার পড়ার পরও হয়তো প্রশ্নটির উত্তর পাওয়াই যায় না। এমন পরিস্থিতে ওই প্রশ্নটি স্কিপ করে যাওয়াই ভাল। যাতে পরে সময় পেলে তার উত্তর করা যায়। অন্যথায় বাদ দিয়ে সামনের প্রশ্নে যাওয়াই ভাল।
স্ট্রাটিজি ৫:
আয়েল্টস টেস্টের এই সেকশনটিতে প্রশ্নে অনেক সময়ই ‘NO MORE THAN THREE WORDS/ LESS’ বলা হয়ে থাকে। এমন তথ্যগুলোতে খেয়াল রাখা।
রিডিং সেকশনে অনেক প্রশ্নেই শব্দের লিমিট দেয়া থাকে। এক্ষেত্রে কখনোই সেই লিমিট অতিক্রম করা ঠিক না। এতে করে উত্তরটি ভুল বলে বিবেচনা করা হয়। তাই লিমিটের বাইরে কোন ভাবেই যেয়ে উত্তর করা যাবে না।
স্ট্রাটিজি ৬:
বানান ঠিক আছে কিনা তা আবারও চেক করে নেয়া।
আয়েল্টস টেস্টে বানান ভুলের জন্য নাম্বার কাটা হয়। এই সেকশনে উত্তরগুলো প্যাসেজ থেকে নিতে হলেও অনেকেই দেখে দেখে বানান ভুল করে বসেন। তাই পরীক্ষার শেষে সময় পেলে উত্তরগুলোতে কোন বাানান ভুল আছে কিনা তা চেক করে দেখতে হবে।
স্ট্রাটিজি ৭:
উত্তর করার সময় Singular এবং Plural ফর্মের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কোন প্রশ্নের Singular বা Plural ফর্মে উত্তর করার প্রয়োজন আছে কিনা তা ভাল ভাবে লক্ষ্য করত হবে। প্রশ্নে যদি Plural ফর্ম বোঝানো হয় তবে সেক্ষেত্রে উত্তরটি সেভাবেই লিখতে হবে। অন্যথায় উত্তরটি ভুল ধরা হতে পারে।
স্ট্রাটিজি ৮:
প্রশ্নে উল্লেখিত ডাটা/ তথ্য/ ইন্সট্রাকশনগুলো ভাল ভাবে খেয়াল করতে হবে।
রিডিং সেকশনের প্রশ্নে যদি True, False বা Not Given এ উত্তর করতে বলা হয় তবে কখনোই Yes বা No দিয়ে উত্তর করা যাবে না। এমনটা হলে উত্তরটি ভুল ধরা হবে।
স্ট্রাটিজি ৯:
উত্তরপত্রে উত্তরগুলো ট্রান্সফার করার জন্য হাতে অবশ্যই অতিরিক্ত কিছু সময় রাখা এবং সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করা।
অনেকেই উত্তর করতে করতে সময়ের দিকে খেয়াল রাখে না। খুব দ্রুত প্যাসেজের মধ্যে উত্তরগুলো খুঁজতে গিয়ে পরে দেখা যায় সেগুলো উত্তরপত্রে তুলতে পারে না। তাই ৪০টি প্রশ্নের উত্তর করতে হলে অবশ্যই হাতে কিছু অতিরিক্ত সময় রাখতে হবে।